আট লাখের বেশি উপকূলবাসীকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে : দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী
ঢাকা, ওপেন প্রেস ডেস্ক : দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মুহিববুর রহমান জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি থেকে মানুষের জানমাল রক্ষায় সরকার কাজ করছে। ইতোমধ্যে আট লাখের বেশি উপকূলবাসীকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘যেহেতু ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত ঘোষণা করা হয়েছে, সেহেতু আমাদের লক্ষ্য হলো সকল মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া।’
প্রতিমন্ত্রী আজ ২৬ মে, ২০২৪, রোববার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবেলায় আন্তঃমন্ত্রণালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটির সভা শেষে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন। খবর বাসস।
তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবেলায় যাবতীয় কার্যক্রম সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছেন এবং প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন।
মুহিববুর রহমান বলেন, আশ্রয় কেন্দ্রের পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের সময় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে কার্যক্রম চালু থাকবে। এছাড়াও সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভার সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি এমন এলাকার সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় কাজ করতে পারেন, সেজন্যও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
মুহিববুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমাল আজ সন্ধ্যা নাগাদ আঘাত হানতে পারে। তবে, মূল ঝড় আজ মধ্যরাতে বাংলাদেশ অতিক্রম করতে পারে।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে যে কোন ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য মন্ত্রণালয়ের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু ট্যানেল আজ সন্ধ্যা থেকে পরের দিন সকাল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। সকল ধরনের লঞ্চ চলাচলও বন্ধ থাকবে বলে তিনি জানান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবেলায় সরকার সার্বিকভাবে প্রস্তুত রয়েছে। ইতোমধ্যে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে প্রয়োজনীয় খাবার পৌঁছে গেছে। আমরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার সকল লোককে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনতে সক্ষম হবো।’
তিনি বলেন, দুর্যোগ মোকাবেলার প্রস্তুতি হিসেবে আমরা সামরিক ও বেসামরিক সকল যানবাহনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের মেডিকেল টিম সমূহ প্রস্তুত রয়েছে। সামরিক বাহিনী ও নৌবাহিনীসহ প্রয়োজনীয় সকল বাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের সময় সৃষ্ট ভূমিধস থেকে লোকজনকে রক্ষা করতে ফায়ার সার্ভিসকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অতীতের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আরো সক্ষমতার সঙ্গে এই ঘূর্ণিঝড়ের যে কোন ধরণের ধ্বংসলীলা মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুত রয়েছি। আশা করি, সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসে এই ঝড়কে ভালোভাবে মোকাবেলা করতে পারব।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঝড়ের সময় রাস্তার ওপর গাছপালা পড়ে যাতায়াতের প্রতিবন্ধকতা তৈরি হতে পারে। অতিদ্রুত গাছপালা সরিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা সচল রাখা হবে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে আন্তঃমন্ত্রণালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব কামরুল হাসানসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।