ধ্বংসাত্মক কাজ করলে ছেড়ে দেবো না : প্রধানমন্ত্রী
রওশন ঝুনু, ঢাকা : আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কিছু কিছু সময় আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াতসহ অনেকেই মাঠে নামতে চায়। তারা আন্দোলন করুক, আমাদের এ ব্যাপারে কোনো কথা নাই। কিন্তু তারা যদি আবারও কোনো রকম অগ্নিসন্ত্রাস, কোনো ধ্বংসাত্মক কাজ করে, যদি তারা এ ধরনের দুর্বৃত্তপনা করে আমরা ছেড়ে দেব না।’
আজ শনিবার ২১ অক্টোবর ২০২৩ দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ আয়োজিত মহাসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটাও বাস্তবতা। কারণ এই বাংলাদেশ, পঁচাত্তর সাল থেকে ১৯৯৬ এরপর ২০০১ থেকে ২০০৮ এই ২৯টি বছর এ দেশের মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবতর্ন হয়নি। যারা ক্ষমতায় ছিলো তারা নিজেদেরর ভাগ্য গড়তেই ব্যস্ত ছিলো, দেশের মানুষের জন্য নয়। একমাত্র আওয়ামী লীগ যখন সরকারে এসেছে তখনই মানুষের ভাগ্য ফিরতে শুরু করেছে। ধানমন্ত্রী বলেন, দেশের প্রতিটি মানুষ নিম্ন স্তর থেকে উচ্চ স্তর সকলেই যেনো ন্যায় বিচার পায়, উন্নত জীবন পায়, দারিদ্র্যমুক্ত হয়, সেটাই আমাদের প্রচেষ্টা। আমাদের দীর্ঘ প্রচেষ্টার ফলে বিএনপি সরকারের আমলে যেখানে দারিদ্র্যের হার ছিলো ৪১ শতাংশ, আমরা তা কমিয়ে ১৮ দশমিক সাত ভাগে নামিয়ে এনেছি। হতদরি্দ্রের হার যেখানে ছিলো ২৫ দশমিক পাঁচ ভাগ, আমরা সেটা মাত্র পাঁচ ভাগে নামিয়ে এনেছি। ইনশাল্লাহ, এ দেশে কেউ হতদরিদ্র, ভূমিহীন, গৃহহীন, ঠিকানাবিহীন থাকবে না। সেটাই আমাদের লক্ষ্য।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা মুজিব শতবর্ষ উদযাপন করেছি সেই লক্ষ্য নিয়েই যে, এ দেশের প্রতিটি মানুষ অন্ততপক্ষে মাথা গোঁজার ঠাঁই পাবে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা খাদ্য উৎপাদন বাড়িয়েছি। এখনো আমাদের ১৮ লাখ মেট্রিক টনের মতো উৎপাদিত চাল বা দানাদার শস্য মজুত আছে।
সারাদেশে থেকে আগত আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছেন। সেখানে এক ইঞ্চি জমিও যেনো অনাবাদী না থাকে। কারণ আপনারা জানেন, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ এবং স্যাংশন কাউন্টার স্যাংশন, সেই সঙ্গে এখন আবার নতুন করে প্যালেস্টাইনেরে উপর যে হামলা হচ্ছে, একটা হাসপাতালে হামলা করে শিশু, নারীদের নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে। এর ফলে আবারও বিশ্বব্যাপী তেল ও জিনিসের দাম বেড়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের সময় আমরা বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দিয়েছি। অনেক উন্নত দেশ, ধনী দেশও দেয়নি কিন্তু বাংলাদেশে আমরা দিয়েছি। আমাদের মানুষকে সুরক্ষিত করার জন্য আমরা আমাদের রিজার্ভের টাকা ব্যয় করে এই ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। কাজেই আমরা মানুষের কল্যাণেই কাজ করি। এই যে বিশ্বব্যাপী খাদ্যমন্দা, তখন আমাদের করণীয় কী? কেউ যেনো বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে, যেটা আগে করেছিলো, আর যেনো এমনটি করতে না পারে, সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমার একটা অনুরোধ আপনাদের কাছে, কোথাও যেনো এক ইঞ্চি জমি অনাবাদী না থাকে। যে যা পারেন তাই উৎপাদন করেন। মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা যেনো নিশ্চিত থাকে। আমরা যেমন আমাদের দেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত রেখেছি, আবার উদ্বৃত্তটা বাইরেও পাঠাচ্ছি।
মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এর আগে প্রধানমন্ত্রী সুপ্রিমকোর্ট এলাকায় বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন করেন।