তিস্তা প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী ভারত : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ঢাকা, ওপেন প্রেস ডেস্ক : পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, তিস্তায় আমরা আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী একটি বৃহৎ প্রকল্প হাতে নিয়েছি- যেখানে ভারত বিনিয়োগ করতে চায়।
৯ মে, ২০২৪,বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ড. হাছান মাহমুদ বাংলাদেশ সফররত ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে একথা বলেন। খবর বাসস।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে সাক্ষাতে দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে আন্তরিক ও সৌদাহ্যপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বহুমাত্রিক ও অত্যন্ত চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে, যে সম্পর্ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।’
কানেক্টিভিটি নিয়ে এবং বাংলাদেশিদের জন্য ভারতীয় ভিসা সহজ করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রতিবছর বাংলাদেশের ১৬ থেকে ১৭ লাখ মানুষের জন্য ভিসা ইস্যু করে ভারত। বিশ্বে সর্বোচ্চ ভিসা ভারত ইস্যু করে বাংলাদেশিদের জন্য। অনেক সময় ভিসা পেতে বিলম্ব হয়। সেটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেছেন, বাংলাদেশে ভারতীয় মিশনের ভিসা কার্যক্রমকে সহজতর এবং মিশনের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য তারা আরও লোকবল নিয়োগ করবেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে উদ্ভাবনী প্রক্রিয়ার কথা আলোচনা করেছি, অনলাইনে আবেদনের কথা বলেছি যেন সহজে মানুষ ভিসা পায়। তারা বিষয়টি আন্তরিকতার সাথে দেখছেন।’
কানেক্টিভিটি নিয়ে আলোচনার কথা উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘আমরা ফিজিক্যাল কানেকটিভিটি নিয়ে আলোচনা করেছি। সেটা অনেক দূর এগিয়েছে। বিশেষ করে, নেপাল ও ভুটানকে ট্রানজিট দেওয়া এবং এ দুই দেশ থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি করার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করা। ইতিমধ্যে নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি করার ক্ষেত্রে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে। ট্যারিফ নিয়েও আলোচনা অনেকটা চূড়ান্ত হয়েছে। সেটি আমাদের ক্রয় কমিটিতে যাবে। সেটি হলে ভারতের ওপর দিয়ে আমরা নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করতে পারব।’
বৈঠকে সীমান্ত হত্যা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘নন-লেথাল (প্রাণঘাতী নয়) এমন অস্ত্র ব্যবহার করার ওপর আমরা গুরুত্বারোপ করেছি। ভারতের পররাষ্ট্রসচিব জানিয়েছেন, তারা তাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে নির্দেশনা দিয়েছেন। তাদের আন্তরিকতার অভাব নেই। এটি নিয়ে দুই দেশের সরকারি ও রাজনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন ভারত সফর নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অনেক আগে থেকে ভারত সফরের কথা রয়েছে। ভারতে যেহেতু নির্বাচন, সেটা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কখন সফর হবে, সেটি নির্ধারণ করা সম্ভব হচ্ছে না। ভারতে নির্বাচনের পর সরকার গঠন হবে। তারপর প্রধানমন্ত্রীর সফর কখন হবে, সেটা ঠিক হবে।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তিস্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিস্তায় আমরা একটা বৃহৎ প্রকল্প নিয়েছি। ভারত সেখানে অর্থায়ন করতে চায়। আমি বলেছি, তিস্তায় যে প্রকল্পটি হবে, সেটি আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী হবে।’
এ সময় দেশে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় আমাদের দেশে অনেক শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হচ্ছে, বিএনপি’র নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও তাদের নেতা-কর্মীরা নির্বাচনে অংশ নিয়েছে।