বিএনপির মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ওপেন প্রেস ডেস্ক : আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপির মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে। তারা এখন উপলব্ধি করছে নির্বাচন বর্জন করা তাদের জন্য আত্মত্যাগের শামিল হয়েছে।
তিনি আজ ২৪ জানুয়ারি, ২০২৪, বুধবার সকালে ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে রাজধানীর বকশীবাজারে নবকুমার ইনস্টিটিউটে ঊনসত্তরের গণ অভ্যুত্থানে শহীদ মতিউর রহমানের স্মৃতিসৌধে দলের পক্ষে নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। সংবাদ বাসস
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আজ পুরো পৃথিবী প্রধানমন্ত্রীকে নতুনভাবে নির্বাচিত হওয়ায় অভিনন্দন জানাচ্ছে। এতে তাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে, তাই আবোল-তাবোল বকছে।’
বিএনপি-জামায়াত স্বাধীনতাসংগ্রামকে অস্বীকার করে উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ঘুমন্ত বাঙালি জাতিকে পলে পলে আন্দোলিত করে এক সাগর রক্ত পাড়ি দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা এসেছে। অথচ আজ বিএনপি-জামায়াত স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস বিকৃত করে বলার চেষ্টা করে একটি হুইসেল বাজানোর মাধ্যমে স্বাধীনতাযুদ্ধ শুরু হয়েছিলো। অর্থাৎ স্বাধীনতা সংগ্রামকে তারা অস্বীকার করে।’
তিনি বলেন, ‘বহু শহীদের রক্তের বিনিমযয়ে, দীর্ঘ স্বানতাসংগ্রাম, স্বাধীনতাযুদ্ধের মাধ্যমে জাতির পিতার নেতৃত্বে আমাদের স্বাধীনতা এসেছে। স্বাধীনতা কারো হুইসেল বাজানোর মাধ্যমে আসেনি। আমাদের এই স্বাধীনতাকে ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে মতিউর রহমানের আত্মদান রয়েছে। তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।’
উপজেলা নির্বাচনে নৌকা প্রতীক থাকছে না এ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে হাছান বলেন, ‘আমারা যখন ২০০৯ সালের সরকার গঠন করি, এরপর যখন উপজেলা নির্বাচন হয় তখন কিন্তু প্রতীক ছিলো না। প্রতীক দেয়ার বিধান পরে চালু হয়। স্থানীয় সরকার নির্বাচন বরাবরই প্রতীকবিহীন হয়েছে। আমরা আগের সেই পদ্ধতির কথাই বলেছি। সেখানে সবাই উপস্থিত থাকবে এবং যে যার মতো নির্বাচন করবে। যারা বিজয়ী হবেন, তারা উপজেলা চেয়ারম্যান হবেন। এটা নতুন কিছু না।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘প্রতীকবিহীন নির্বাচন করার বিষয়টি আমাদের মধ্যে বহু আগে থেকে আলোচনায় ছিল। হঠাৎ করে সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রায় দুই বছর ধরে এটি আলোচনার মধ্যে ছিল। সর্বশেষ গত ওয়ার্কিং কমিটির মিটিংয়ে এটি সিদ্ধান্ত হয়।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, উপ-দপ্তর সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য নির্মল চট্টোপাধ্যায়, কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ সরকার বিটু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ কামাল, আইন বিষয়ক সম্পাদক জগলুল কবির, দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ উপস্থিত ছিলেন।
এ দিন দুপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করতে আসেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক ।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠকে হাইকমিশনার সারাহ কুক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নবনিযুক্ত হওয়ায় ড. হাছান মাহমুদের হাতে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের শুভেচ্ছা বার্তা তুলে দেন। শুভেচ্ছাপত্রে ডেভিড ক্যামেরন আগামীতে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তরাজ্য সবসময়ই আমাদের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী এবং বন্ধুরাষ্ট্র। আজও হাইকমিশনারের সঙ্গে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, সাইবার নিরাপত্তা, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি কমিয়ে আনা, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলা, জিডিপিতে করের অনুপাত বৃদ্ধি, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনসহ বহুমাত্রিক সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে জিডিপিতে ট্যাক্সের অনুপাত অত্যন্ত নিম্ন। উপমহাদেশের মধ্যেও প্রায় সর্বনিম্ন। যেখানে ইউরোপের দেশগুলোর জিডিপিতে ট্যাক্সের অনুপাত প্রায় ৩০ শতাংশ, সেখানে আমাদের এই অনুপাত সম্ভবত ১০ শতাংশেরও কম। এটি কিভাবে বৃদ্ধি করা যায় সেটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং তারা সহযোগিতায় প্রস্তুত বলে জানিয়েছে।
ড. হাছান আরও জানান, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে শুরু থেকে যুক্তরাজ্য আন্তরিক সহযোগিতা করছে। আজকের বৈঠকেও আমি বলেছি, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে তাদের নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন করা।
বিএনপি নেতা তারেক রহমানকে দেশে ফেরত আনা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকার যে কোনো দন্ডপ্রাপ্ত আসামির শাস্তি কার্যকর করার বিষয়ে বদ্ধপরিকর। তারেক রহমানও দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। তার বিষয়েও সরকার উপযুক্ত সময়ে পদক্ষেপ নেবে।