শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কাল
ঢাকা, (২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪), ওপেন প্রেস ডেস্ক/বাসস ডেস্ক : নজিরবিহীন অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের পর কাল শ্রীলঙ্কায় প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। কলম্বো থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
মন্দার কারণে ২০২২ সালে হাজার হাজার মানুষ সাবেক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজপাকসের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। রাজপাকসে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। পরে বিক্রমাসিংহে ক্ষমতায় বসেন।
অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করা এবং কয়েক মাসের খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধের ঘাটতির অবসান ঘটাতে কৃতিত্বের দাবিদার বিক্রমাসিংহে এখন নতুনভাবে ম্যান্ডেট চাইছেন।
বিক্রমাসিংহে চীনসহ দ্বিপক্ষীয় ঋণদাতাদের সাথে ২০২২ সালের সরকারের খেলাপি হওয়া শ্রীলঙ্কার ৪৬ বিলিয়ন ডলারের বিদেশি ঋণ পুনর্গঠনে আলোচনা চালাচ্ছেন। কিন্তু তার কর বৃদ্ধি ও উদার ইউটিলিটি ভর্তুকি প্রত্যাহার করে সরকারের হিসেবের ভারসাম্য বজায় রাখার নীতি জনগণের কাছে চরমভাবে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।
প্রচারের শেষ দিনগুলোতে বিক্রমাসিংহে বলেন, ‘সেই সময়ের কথা ভাবুন যখন সমস্ত আশা হারিয়ে গিয়েছিল। আমাদের কাছে খাবার, গ্যাস, ওষুধ ছিল না। বা কোন প্রকার আশা ছিল না।’ এখন আপনাদেরর কাছে একটি সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ এসেছে, আপনারা সন্ত্রাসের সময়ে ফিরে যেতে চান, নাকি অগ্রগতিতে যেতে চান।’
তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি এখনও দুর্বল। ২০২২ সালে খেলাপি হওয়া ৪৬ বিলিয়ন বিদেশি ঋণ পরিশোষ এখনো পরিশোধ শুরু হয়নি।
বিক্রমাসিংহে বলেন, তিনি নির্বাচিত হলে কঠোর কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে যাবেন।
ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ এই সপ্তাহে এক প্রতিবেদনে বলেছে, ‘বিক্রমাসিংহের সরকার কিভাবে অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলা করেছে এবং পরবর্তী পরিমিত পুনরুদ্ধার করেছেন- এই নির্বাচনে মূলত তা নিয়ে একটি গণভোট হবে। তবে এতে আরো বলা হয়, ভর্তূকি প্রত্যাহার এবং জনসাধারণের কাছে অন্যায্য হিসেবে বিবেচিত বিভিন্ন কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করায় অনেক নাগরিক এ সময়ে বেশ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।’
বিক্রমাসিংহে অনুরা কুমারা দিসানায়াকাসহ দুজন শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বীর মুখোমুখি হবেন। এক সময়ের প্রান্তিক মার্কসবাদী দলনেতা ছিলেন দিশানায়াকা। সহিংস অতীতের কারণে তিনি নিন্দিত হয়েছেন। তার দল ১৯৭০ ও ১৯৮০ এর দশকে দুটি ব্যর্থ অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেয়। যার ফলে ৮০ হাজারের বেশি লোক নিহত হয়। গত সংসদ নির্বাচনে দলটি চার শতাংশেরও কম ভোট জিতে। কিন্তু শ্রীলঙ্কার সংকট দিশানায়াকার জন্য একটি সুযোগ প্রমাণ করেছে, দ্বীপের ‘দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তন করার প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে তিনি সমর্থনের ঢেউ দেখছেন।
বিক্রমাসিংহের আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী বিরোধী নেতা সজিথ প্রেমাদাসা। তিনি দেশটিতে কয়েক দশক ধরে চলা গৃহযুদ্ধ চলাকালে ১৯৯৩ সালে নিহত সাবেক প্রেসিডেন্ট রানাসিংহ প্রেমাদাসার ছেলে।