মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন ওবায়দুল কাদের
রওশন ঝুনু, ঢাকা : প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের তোলা সেলফি নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে বক্তব্য প্রদান করেছেন, তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এমনটি, শুভবোধ সম্পন্ন কোনো রাজনৈতিক নেতৃত্বের কাছ থেকে জাতি প্রত্যাশা করে না।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গতকাল রোববার গণমাধ্যমে প্রদত্ত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে আজ সোমবার ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এ সব কথা বলেন।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশ সদস্য না হওয়া সত্ত্বেও বিশ্বের শক্তিধর রাষ্ট্রসমূহের সমন্বয়ে গঠিত জি-২০ সম্মেলনে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতি বিশ্বনেতৃবৃন্দের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। প্রধানমন্ত্রীর সুদক্ষ নেতৃত্ব, অসাধারণ ব্যক্তিত্ব এবং কর্মকুশলতার উজ্জ্বল প্রভায় বিশ্বনেতৃবৃন্দের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছেন। রাষ্ট্র পরিচালনায় তাঁর মেধা, মনন, সততা ও সাফল্যে এক সময়ের দরিদ্রপীড়িত অনিশ্চিত অর্থনীতির বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে উন্নীত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী পদক্ষেপ ও গৃহীত নীতির কারণে গত দেড় দশকে বাংলাদেশ যে সফলতা অর্জন করেছে তা নজিরবিহীন। সফলভাবে রাষ্ট্র পরিচালনায় অসাধারণ যোগ্যতা ও দক্ষতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত প্রধানমন্ত্রীর প্রতি বিশ্বনেতৃবৃন্দের সম্মানসূচক অভিব্যক্তিতে তারই প্রতিফলন ঘটেছে। যার মধ্য দিয়ে বিশ্বনেতৃবৃন্দের শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁসহ বিশ্বনেতৃবৃন্দ শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন। জি-২০ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর গৌরবোজ্জ্বল উপস্থিতি দেশের আপামর জনগণকে অনন্য মর্যাদায় অভিষিক্ত ও গর্বিত করেছে।
বৃতিতে তিনি আরো বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের তোলা সেলফি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনবে এমনটা নয়, তবে তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্কের ইঙ্গিত বহন করে। বর্তমান সরকারের কোনো বন্ধু নেই বলে বিএনপি নেতারা এতোদিন ধরে যে অপপ্রচার চালিয়ে আসছে, তার যথার্থ জবাব এই সেলফিতেই প্রতিফলিত হয়েছে। শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টই নয়, অন্যান্য বিশ্বনেতারাও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে উষ্ণ মনোভাব নিয়ে কুশল বিনিময় করেছেন যার ছবি ও সংবাদ ইতোমধ্যে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
দেশপ্রেমিক কোনো ব্যক্তি কিংবা রাজনৈতিক সংগঠন দেশকে বন্ধুহীন করার আকাংক্ষা লালন-পালন করতে পারে না। কিন্তু বিএনপি এই হীন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থেকে দীর্ঘদিন ধরে দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিএনপি নেতৃবৃন্দ লাগাতারভাবে তাদের বিদেশি প্রভুদের দ্বারে দ্বারে ধর্ণা দিচ্ছে। একইসাথে তারা বিদেশি প্রতিনিধি এবং সংস্থাসমূহের নিকট বাংলাদেশ সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি নিয়ে কথা বলেছেন! এই ভিসানীতিকে সরকারের পক্ষ থেকেও সাধুবাদ জানানো হয়েছে। ভিসানীতি নিয়ে সরকার কখনো কোনো অস্বস্তিতে ছিলো না। বরং ভিসানীতির কারণে তথাকথিত আন্দোলনের নামে বিএনপির আগুনসন্ত্রাস এবং ধ্বংসাত্মক অপরাজনীতির উপর একটি বিধি-নিষেধ আরোপিত হয়েছে।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, সফল রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিনিয়ত সাফল্য ও অগ্রগতির নতুন নতুন মাইলফলক অতিক্রম করছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা জাতির সামনে যে অঙ্গীকার করেছেন তিনি তা সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন করে চলেছেন। এক সময় বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মঙ্গা-খরা পীড়িত এবং খাদ্য ঘাটতিতে জর্জরিত ভঙ্গুর অর্থনীতির দেশ ছিলো। বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে সে সংকট জয় করে বাংলাদেশ আজ উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির অভিযাত্রায় এগিয়ে
যাচ্ছে। দারিদ্র্যের হার ৪১ শতাংশ থেকে ১৮.৭ শতাংশে এবং অতি দারিদ্র্যের হার ২৫ শতাংশ থেকে ৫.৬ শতাংশে নেমে এসেছে। দেশের শতকরা ২৯ ভাগ মানুষ বিভিন্ন ভাতার আওতায় এসেছে। সারাদেশে ১৩ লাখের বেশি ভ‚মিহীন/গৃহহীন পরিবারকে বিনামূল্যে গৃহ প্রদান করা হয়েছে। পদ্মাসেতু, এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়েসহ একের পর এক মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদক্ষ নেতৃত্বে ধারাবাহিক উন্নয়ন ও অগ্রগতির মধ্য দিয়ে বিশ্বসভায় বাংলাদেশ আজ একটি আত্মমর্যাদাশীল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাঙালি জাতি ও বাংলাদেশের সম্মান উত্তরোত্তর বৃদ্ধি করতে ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও নিরলস পরিশ্রমের জন্য প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা, কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।