সারাদেশ

প্লাস্টিক ও পলিথিন বর্জন করতে হবে : বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী

রংপুর, ওপেন প্রেস ডেস্ক : বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি বলেছেন, ভবিষ্যত প্রজন্ম ও পরিবেশের কথা চিন্তা করে, পাট খাতের উন্নয়নে কাজ করতে হবে।

আজ ২৩ মে, ২০২৪, বৃহস্পতিবার রংপুরে শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জেলার পাট চাষী, মিল মালিক, ব্যবসায়ী ও পাটখাত সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। খবর বাসস।

মন্ত্রী বলেন, প্লাস্টিক ও পলিথিন বর্জন করতে হবে। আমরা সুন্দর একটি পৃথিবীর স্বপ্ন দেখি, একটি সুন্দর বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি। এজন্য পরিবেশকে দূষণ ও ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে হবে।

পাট অধিদপ্তর ও জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টারের উদ্যোগে রংপুর জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এ মত বিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার মো. জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- রংপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মো. আসাদুজ্জামান বাবলু, রংপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য জাকির হোসেন সরকার, জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য নাছিমা জামান ববি, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ। এছাড়া পাট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জিনাত আরাসহ বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর প্রতিনিধি, অটো রাইস মিল ব্যবসায়ী, পোল্টি ফিড ব্যবসায়ী, বস্তা ব্যবসায়ী, জুট মিল মালিক প্রতিনিধি, চালকল মালিক প্রতিনিধি ও পাট চাষিবৃন্দ।

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী রাইস মিলারদের শতভাগ পাটের তৈরি বস্তা ব্যবহার করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এতে সামগ্রিক বিবেচনায় আপনারা লাভবান হবেন, উপরন্তু পরিবেশের বিষয় তো আছেই। তাছাড়া একেকটি চালের বস্তার ওজন ৪০০ গ্রামের মতো। চালের সাথে আপনারা বস্তার দামও পেয়ে যাচ্ছেন।

মন্ত্রী বলেন, দেশের অর্থনীতিতে পাটের হারানো ঐতিহ্য পুনঃরুদ্ধার এবং পরিবেশ বান্ধব পাটজাত পণ্যের বহুমুখী ব্যবহারের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা গ্রহণ করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন অনুশাসন ও দিক নির্দেশনা প্রদান করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন ও দিক নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, সরকার ইতোমধ্যে ‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন-২০১০’, ‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যমূলক ব্যবহার বিধিমালা, ২০১৩’ এবং ‘পাট আইন, ২০১৭’ প্রণয়ন করেছে। এ আইনগুলো সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নে মাননীয় সংসদ সদস্য/জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান/সংশ্লিষ্ট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র/পৌরসভার মেয়রকে উপদেষ্টা ও জেলা প্রশাসকদের আহ্বায়ক করে ৪১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।

মন্ত্রী আরো বলেন, দিনাজপুর, নওগাঁ, চাপাইনবাবগঞ্জ, কুষ্টিয়া ও শেরপুর জেলাসহ চাল উৎপাদন প্রবণ ১৮টি জেলার চালকলসমূহে পাটের বস্তার ব্যবহার নিশ্চিতকরণের জন্য বিশেষ কর্মসূচি চলমান রয়েছে। উল্লেখিত আইন বাস্তবায়নে জেলা চেম্বার, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, চালকল মালিক সমিতি, চালকল মালিক এবং ধান, চাল, গম, ভুট্টা, স্যার ও চিনিসহ মোট ১৯টি পণ্যের উৎপাদনকারী ও সরবরাহকারীদের সহযোগিতা কামনা করছি। সেই সাথে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বলবো এ আইন বাস্তবায়নে আপনারা ধীরে ধীরে কঠোর হন।

নানক পাটকল মালিকদের ৫০ কেজির চালের বস্তা ছাড়াও ২৫/৩০ কেজির বস্তা তৈরির আহবান জানান।

যেহেতু বেশিরভাগ পরিবারে মাসে ২৫/৩০ কেজি চাল লাগে। কাজেই ছোট বস্তা পেলে রাইস মিলাররাও লুফে নিবে।

পাট বীজ উৎপাদনে বিদেশের উপর নির্ভরশীলীলতা কাটিয়ে স্বনির্ভর হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।

তিনি বলেন, পাট অধিদপ্তরের আওতায় উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর পাট ও পাট বীজ উৎপাদনের জন্য একটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে। এর আওতায় ৩৬টি জেলার ১৫০টি উপজেলায় পাট বীজ উৎপাদন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এজন্য প্রতি উপজেলায় ৩০০ জন করে পাট চাষী বাছাই করা আছে- যারা এই প্রকল্পের মাধ্যমে বিনামূল্যে পাট বীজ, সার, কীটনাশক ইত্যাদি পাচ্ছে। কিন্তু এ সকল প্রণোদনা অনেক ক্ষেত্রেই প্রকৃত পাট চাষীরা পায় না বলে- অভিযোগ রয়েছে, যে জন্য আমরা তেমন সুফল পাচ্ছি না। আরও একটি অভিযোগ রয়েছে যে- কৃষকরা সময় মতো পাট বীজ পায় না। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে আরো সক্রিয় হবার নির্দেশনা প্রদান করেন।

পরে মন্ত্রী রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার (জেডিপিসি) আয়োজিত বহুমুখী পাট পণ্য মেলা ২০২৪- এর উদ্বোধন করেন।

Share

Follow us