অর্থ-বাণিজ্য

কর ছাড় যৌক্তিক করা প্রয়োজন : অর্থ প্রতিমন্ত্রী

ঢাকা, ওপেন প্রেস ডেস্ক : বিভিন্ন খাতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) প্রদত্ত কর ছাড় সুবিধা  যৌক্তিকীকরণ করার প্রয়োজন বলে মনে করেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান।

তিনি বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি কর অব্যাহতির বিষয়গুলো যৌক্তিকীকরণ করা দরকার। অনেকক্ষেত্রে ব্যবসা প্রসারের জন্য ২৫ বছর আগে কর অবকাশ সুবিধা দেওয়া হয়। দীর্ঘ সময় ধরে তারা এই সুবিধা পেয়ে আসছে। এখন তাঁদের নিজেদের মত করে চলা সমীচীন।’

তিনি জানান, ২০১৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গত ৫ বছর ১২০ ধরনের কর ছাড় আছে। এগুলো তো নিশ্চয় ব্যবসায়ীদের সুযোগ সুবিধা দেওয়ার জন্য করা হয়েছে। যা নিয়ে এখন ভাবতে হবে।

৩০ এপ্রিল, ২০২৪, মঙ্গলবার রাজধানীর হোটেল আমারিতে গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউট (পিআরআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আহরণ বাড়ানোর প্রয়োজনীয় রূপরেখা’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি একথা বলেন। খবর বাসস।

প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম এবং বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম।

সেমিনারে প্যানেল আলোচনক ছিলেন মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র (এমসিসিআই) সভাপতি কামরান টি রহমান, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসির (সিএসই) চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র (ডিসিসিআই) সভাপতি আশরাফ আহমেদ এবং এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আব্দুল মজিদ।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পিআরআই চেয়ারম্যান ড. জাহিদী সাত্তার, নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর এবং ভাইস চেয়ারম্যান ড. সাদিক আহমেদ। পিআরআই পরিচালক ড. আব্দুর রাজ্জাক সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন।

অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান মনে করেন রাজস্ব আয় বাড়াতে হলে অটোমেশনের বিকল্প নেই। তিনি বলেন, কর প্রক্রিয়া অব্যশই অনলাইনভিত্তিক হতে হবে। তিনি আরও বলেন, অনানুষ্ঠানিক আর্থিকখাতের আকার অনেক বড়। সেখানে কর সংগ্রহের বিষয় ভাবতে হবে। একইসঙ্গে তিনি পুঁজিবাজার শক্তিশালীকরণের উপর গুরুত্বারোপ করেন।

আওয়ামীলীগের নির্বাচনী ইশতেয়ারের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের ইশতেহারে রাজস্ব আয়ের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করার কথা বলা আছে। কারণ অর্থের যদি অপচয় হয়, তাহলে রাজস্ব সংগ্রহ করে লাভ হলো কি?। সেজন্য আমরা রাজস্ব আয়ের সঠিক ব্যবহারের কথা বলছি।

সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান বলেন, ব্যাংক সুদহারের বিষয়টি নির্ধারণ বাংলাদেশ ব্যাংকের উপর ছেড়ে দেওয়াটা ভালো। কারণ বিভিন্ন পুন:অর্থায়ন স্কীম রয়েছে-যার সুদহার আলাদা আলাদা। তাই ব্যাংক সুদহার বাংলাদেশ ব্যাংকের উপর ছেড়ে দেওয়া টা সমীচীন।

এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে অনেক ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তারা এখন এর থেকে বেরিয়ে আসার সমাধান চাই। তিনি বলেন,ব্যবসায়ীরা হয়রানিমুক্ত পরিবেশে কর দিতে আগ্রহী। এনবিআরকে সেই পরিবেশ দিতে হবে।

পিআরআই নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর তাঁর প্রবন্ধে উল্লেখ করেন রাজস্ব প্রশাসনে সংস্কারমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন এবং পর্যায়ক্রমে কর-ছাড় বাদ দেওয়া গেলে আগামী চার বছরে ৬০০ বিলিয়ন টাকার রাজস্ব আয় সংগ্রহ করা সম্ভব। তিনি বলেন, জিডিপির মাত্র ৭ থেকে ৮ শতাংশ রাজস্ব আয় দিয়ে উন্নত দেশে যাওয়া সম্ভব নয়।

Share

Follow us