জমজ শিশুর অপারেশনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় সেনাবাহিনীর ভূয়সী প্রশংসা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
ঢাকা, ওপেন প্রেস ডেস্ক : স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন এবং হাঙ্গেরীয় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) এসে জমজ শিশু রাবেয়া ও রোকেয়ার অপারেশনে সন্তুষ্টি প্রকাশ এবং গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় সেনাবাহিনীর ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
আইএসপিআর’র এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, রোববার এ কথা জানানো হয়। খবর বাসস।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিরল মাথা জোড়া লাগানো জমজ শিশু রাবেয়া ও রোকেয়ার অপারেশন পরবর্তী (চযধংব-৪ ঈৎধহরড়ঢ়ষধংঃরবং, ঝবপড়হফধৎু চষধংঃরপ ঝঁৎমবৎু ্ জবযধনরষরঃধঃরড়হ) ফলোআপের জন্য গত ২৪ এপ্রিল স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন এবং হাঙ্গেরীয় চিকিৎসক দল ঢাকা সিএমএইচ এ আসেন। পরিদর্শন শেষে মন্ত্রী এবং বিশেষ চিকিৎসক দল চলমান চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং এ অপারেশনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভূয়সী প্রশংসা করেন। এ প্রেক্ষিতে আজ রোববার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে এক প্রেস কনফারেন্সের আয়োজন করা হয়, যেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন উপস্থিত ছিলেন । এছাড়াও, অনুষ্ঠানে ঊর্ধ্বতন সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, পাবনার চাটমোহর উপজেলার রফিকুল ইসলাম ও তাসলিমা বেগম দম্পতির ঘরে জন্ম নেয় বিরল দুই মাথা জোড়া লাগানো জমজ সন্তান। যাদেরকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয় ঈৎধহরড়ঢ়ধমঁং ঞরিহং। মাথা জোড়া লাগানো জমজ শিশু চিকিৎসা বিজ্ঞানের জন্য একটি চ্যালেঞ্জিং বিকলতা। ২ দশমিক ৫ মিলিয়ন জীবিত জমজ শিশুদের মধ্যে মাত্র একটি জোড়া মাথার শিশু জন্ম নেয়। প্রায় শতকরা ৪০ ভাগ জোড়া মাথার শিশু মৃত অবস্থায় জন্মগ্রহণ করে এবং আরও এক তৃতীয়াংশ শিশু ২৪ ঘন্টার মধ্যেই মৃত্যুবরণ করে। আনুমানিক শতকরা ২৫ ভাগ শিশু জোড়া মাথা নিয়ে বেঁচে থাকে, যাদের শল্য চিকিৎসার মাধ্যমে আলাদা করার সুযোগ রয়েছে কিন্তু এর সাফল্যের হারও খুব বেশি নয়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এই বিরল অপারেশনটি ১ম বারের মতো ২০১৯ সালের ১ আগস্ট ৩৩ ঘন্টা ব্যাপী সিএমএইচ ঢাকায় সম্পন্ন হয় যা বিশ্বে ১৭তম।
অস্ত্রপচারের সবচাইতে জটিল অংশ ‘জমজ মস্তিষ্ক’ আলাদাকরণের কাজটি সম্পন্নের জন্য ২০১৯ সালের ২২ জুলাই রাবেয়া ও রোকেয়া সিএমএইচ ঢাকায় আসে। পুনরায় ২০২০ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি এবং ১৩ মার্চ ২ ঘন্টা ৩০ মিনিট ব্যাপী দু’টি অপারেশন সিএমএইচ ঢাকায় সফলভাবে সম্পন্ন হয়। এ অপারেশন দু’টির মাধ্যমে তাদের মাথায় বিদ্যমান ক্ষতস্থান নতুন কোষ দিয়ে পূর্ণ করা হয়। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে রাবেয়ার মাথার বাম দিকের চামড়ার ক্ষত শুরু হয় এবং পরবর্তীতে বৃদ্ধি পেয়ে চামড়ার নিচে লাগানো কৃত্রিম মাথার খুলি দৃশ্যমান হয়। এই জটিলতা সমাধানের নিমিত্তে বাংলাদেশ ও হাঙ্গেরীর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ ২০২২ সালের ৭ মার্চ ঈৎধহরড়ঢ়ষধংঃু ঝঁৎমবৎু এর মাধ্যমে সিএমএইচ ঢাকায় একটি সফল অস্ত্রপচার সম্পন্ন করেন। বর্তমানে রোকেয়া ও রাবেয়া দুজনই সুস্থ আছে।
এ অপারেশনে দেশি ও বিদেশি চিকিৎসকসহ শতাধিক বিশেষজ্ঞ ডাক্তার অংশগ্রহণ করেন।