জাতীয়

ঋণের সুদের হার কমাতে বেইজিংকে অনুরোধ করবে ঢাকা: তৌহিদ

ঢাকা, ওপেন প্রেস ডেস্ক : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের আসন্ন সফরকালে বাংলাদেশ চীনের কাছ থেকে প্রাপ্ত ঋণের সুদের হার কমানো এবং ঋণ পরিশোধের সময়কাল ৩০ বছর পর্যন্ত বাড়ানোর দাবি জানাবে।

আজ ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ বুধবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তার বেইজিং সফরের বিষয়ে এক ব্রিফিংয়ে তৌহিদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রধানত, অর্থনৈতিক বিষয়াদি আলোচনায় আসবে। কিছু বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চীনের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ খবর বাসস।

উপদেষ্টা বলেন, তিনি দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে প্রতিশ্রুতি ফি প্রত্যাহারের অনুরোধও করবেন।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ের আমন্ত্রণে আগামী ২০-২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত পররাষ্ট্র উপদেষ্টার চীন সফর বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত।

তৌহিদ বলেন, বাজেট সহায়তা, চলমান প্রকল্পের জন্য ঋণ ছাড় ত্বরান্বিত করা এবং প্রতিশ্রুতি ফি অপসারণ তার চীনা প্রতিপক্ষের সাথে আলোচনায় গুরুত্বের সাথে স্থান পাবে।

তিনি বলেন, ‘আমরা আরও অনুসন্ধান করব যে, চীন কীভাবে বাজেট সহায়তা প্রদান করতে পারে এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য ঋণ ছাড় ত্বরান্বিত করতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, প্রতিশ্রুতি ফি সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের জন্যও অনুরোধ করা হবে।

গত বছরের আগস্টে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অর্ন্তর্র্বতীকালীন সরকার গঠনের পর থেকে ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর’ হিসেবে এই সফরকে বেইজিংয়ের সাথে সম্পর্ক জোরদার ও গভীর করার লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এ সফরকালে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতাসহ সহযোগিতার মূল ক্ষেত্রগুলো পর্যালোচনা করা হবে।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, কৃষি, শিক্ষা, অবকাঠামো, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানসহ ভবিষ্যতের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের জন্য একটি কাঠামো প্রতিষ্ঠার বিষয়েও আলোচনা করা হবে।

২০২১ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং প্রস্তাবিত বহুপক্ষীয় উন্নয়ন কাঠামো, গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ (জিডিআই) সম্পর্কে জানতে চাইলে তৌহিদ উল্লেখ করেন যে, এই উদ্যোগের সাথে বাংলাদেশের সম্পৃক্ততা ইতিবাচকভাবে তুলে ধরা হবে।

বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের ধরন ব্যাপক ও দীর্ঘমেয়াদি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘চীনের সাথে আমাদের সম্পর্ক কেবল সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক নয়।’

বিগত সরকারের শাসনামলে শুরু হওয়া ৫ বিলিয়ন ডলারের বাজেট সহায়তা প্রস্তাব সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তৌহিদ বলেন, এ বিষয়ে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।

বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বর্তমানে বার্ষিক প্রায় ২৫ বিলিয়ন ডলার, যেখানে বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা চীনের পক্ষে ব্যাপকভাবে অনুকূল।

এই সফরকালে বাণিজ্য পুনর্গঠন এবং বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ বৃদ্ধির সুযোগ অন্বেষণের বিষয়ে আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এই সফর বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উদযাপনের প্রস্তুতির সূচনাও করবে, যা ২০২৫ সালে উদযাপিত হবে।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তার এ সফরকালে চায়না ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ এবং সাংহাই ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজে বক্তৃতা দেবেন।

বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে তার সাংহাইতে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সাথেও বৈঠক করার কথা রয়েছে।

তৌহিদ ২০ জানুয়রি ঢাকা ত্যাগ করবেন এবং ২৪ জানুয়ারি দেশে ফিরে আসবেন। ২১-২৩ জানুয়ারি সরকারি আনুষ্ঠানিক কর্মসূচির পরিকল্পনা রয়েছে।

Share

Follow us