জাতীয়

গণমাধ্যমকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে জনগণের স্বার্থে কাজ করতে হবে : সংস্কার কমিশন

ঢাকা, ওপেন প্রেস ডেস্ক : গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ বলেছেন, গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট সংবাদপত্র, টেলিভিশন, রেডিও এবং অনলাইন নিউজ পোর্টালের রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে জনগণের স্বার্থে কাজ করতে হবে।

আজ ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪ মঙ্গলবার রাজধানীর সার্কিট হাউজ রোডের তথ্য ভবনে নিউজ পেপার ওনার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব) সভাপতি এবং সদস্যদের সাথে গণমাধ্যমের সংস্কার কমিশনের এক মতবিনিময় সভায় কমিশন প্রধান এ কথা বলেন। খবর বাসস।

তিনি বলেন, বিগত আন্দোলনে সংবাদ মাধ্যমের ব্যর্থতা ও বির্তকিত ভূমিকার কারণে যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তার পটভূমিতে গণমাধ্যমকে কীভাবে জনগণের স্বার্থে কাজে লাগানো যায় সে বিষয়ে তিনি মতামত প্রদানের আহবান জানান।

সভায় ডেইলি স্টার প্রকাশক মাহফুজ আনাম বলেন, গণমাধ্যমের আইনগত কাঠামো ও পরিবেশ সবকিছু মিলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পরিবেশ আমাদের নেই।

প্রথম আলোর প্রকাশক মতিউর রহমান বলেন, বিশ্বজুড়ে সংবাদপত্র এখন আর সংবাদপত্র নেই। ডিজিটাল মিডিয়ার যুগে ছাপা সংবাদপত্র এমনিতেই রুগ্ন শিল্পে পরিণত হয়েছে। করোনা মহামারীতে ব্যাপকভাবে সার্কুলেশন ও বিজ্ঞাপন আয় কমে গেছে। বিগত ১৫ বছর ও তার আগের সরকার সংবাদপত্র নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। অতীতের কোনো সরকার সংবাদপত্রের স্বাধীনতা দিতে পারেনি বলে তিনি মত প্রকাশ করেন। সাংবাদিকরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেননি। তবে বিগত সরকার সংবাদপত্রকে শত্রু হিসাবে দেখেছে।

নিউ এজের প্রকাশক শহিদুল্লাহ খান বলেন, পত্রিকার মিডিয়া তালিকাভুক্তি পদ্ধতি রাখার প্রয়োজন আছে কি না সে বিষয়ে ভেবে দেখা দরকার। প্রেস কাউন্সিলকে আধুনিকায়ন করা দরকার এবং এটিকে নির্বাহী বিভাগের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করতে হবে।

দৈনিক বণিক বার্তার প্রকাশক হানিফ মাহমুদ বলেন, গণমাধ্যমে সংস্কার কমিশনকে অন্য কোনো স্বার্থানেষী গ্রুপ ব্যবহার করতে না পারে সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে। সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকার কারণে বহু সম্পাদক এখন মামলার স্বীকার, পলাতক এবং তাদের অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল করা হয়েছে।

দৈনিক সংবাদের প্রকাশক আলতামাস কবির বলেন, রাজনৈতিক পক্ষপাত থাকলেও স্বাধীন সাংবাদিকতা সম্ভব এবং তা নিশ্চিত করতে হবে।

দৈনিক ফিনান্সিয়াল হেরাল্ড এর প্রকাশক মাসরুর রেজা বলেন, সংবাদপত্র প্রকাশ ও অনুমতি প্রদানের ব্যবস্থাপনায় ক্ষমতার অপপ্রয়োগ হয়েছে। যা ভবিষ্যতে বন্ধ করার সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করার জন্য তিনি কমিশনের প্রতি আহবান জানান।

নোয়াবের সভাপতি সমকালের প্রকাশক এ কে আজাদ বলেন, প্রকাশক হিসাবে আমাদেরকেও হুমকি ও ক্ষতির স্বীকার হতে হয়েছে। তিনি বলেন, করোনার সময় সকল শিল্প প্রতিষ্ঠানকে প্রণোদনা দেওয়া হলেও সংবাদপত্রকে কোনো প্রণোদনা দেওয়া হয়নি। কমিশন সম্পাদকদের স্বাধীনতার জন্য সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করবেন বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।

কমিশন প্রধান বলেন, কমিশনের কোনো স্বার্থন্বেষী দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। অংশীজনের সুনির্দিষ্ট মতামতের ভিত্তিতে কমিশন তার সুপারিশমালা তৈরি করবে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার স্বায়ত্বশাসন নীতিমালা প্রণয়নেও কমিশন সব মহলের মতামত গ্রহণ করবে।

গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের এই সভায় কমিশনের সদস্য অধ্যাপক গীতিআরা নাসরীন, শামসুল হক জাহিদ, আখতার হোসেন খান, সৈয়দ আবদাল আহমদ, ফাহিম আহমেদ, জিমি আমির, মোস্তফা সবুজ, টিটু দত্ত গুপ্ত, আব্দুল্লাহ আল মামুন ও বেগম কামরুন্নেসা হাসান উপস্থিতি ছিলেন।

Share

Follow us