চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে শহিদদের নামে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা হবে: তারেক রহমান
ঢাকা, ওপেন প্রেস ডেস্ক : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ভবিষ্যতে জনগণের ভোটে তাঁর দল ক্ষমতায় গেলে শিক্ষার্থী-জনতার গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের (শহিদ) নামে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠাগুলোর নামকরণ করা হবে।
তিনি আজ ১৮ নভেম্বর, ২০২৪ সোমবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভারর্চূয়াল প্লাটফর্মে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন। খবর বাসস।
‘আমরা বিএনপি পরিবার’ নামের সংগঠন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
‘চব্বিশের গণআন্দোলনে শহিদদের চিরকাল শ্রদ্ধাভরে স্মরণ রাখতে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামকরণ এসব শহিদের নামে করার একটি প্রস্তাব বিএপি’র রয়েছে’-উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন,‘ ইনশাল্লাহ ভবিষ্যতে বিএনপি সরকার গঠনে সক্ষম হলে যারা শহিদ হয়েছেন সারাদেশে স্বৈরাচারকে বিদায় করার জন্য, যারা নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছেন-তাদের নাম যাতে হারিয়ে না যায় সেজন্য এসব মানুষের প্রত্যেকের নামে বিভিন্ন এলাকায় রাষ্ট্রের যে প্রতিষ্ঠানগুলো তৈরি হবে, সেগুলোর নামকরণ তাদের নামে করা হবে।
সেটি থানা পর্যায় হোক, জেলা পর্যায় হোক, বিভাগ পর্যায় হোক কিংবা ঢাকা শহরে হোক, বিভিন্ন স্থানে এই শহিদদের নামে সেই প্রতিষ্ঠানগুলোর নামকরণ করার একটি প্রস্তাবনা আমাদের আছে।’
বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘যারা বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন কতটুকু আমরা পারবো জানি না, তবে আমাদের অবশ্যই প্রচেষ্টা থাকবে, যে কয়জন মানুষকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলে তারা কিছুটা হলেও সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন সেটা আমরা করবো।’
তারেক রহমান বলেন, ‘এ অনুষ্ঠানে আমরা আজকে ১০জন মানুষকে হুইল চেয়ার দিচ্ছি। আন্দোলনের বাইরেও সামাজিকভাবে বহু মানুষ আছে, যারা বিভিন্নভাবে জন্ম থেকে হোক, অথবা বিভিন্ন কারণে যাদের পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে কেউ যদি পঙ্গু হয়ে থাকেন সেই পরিবারের ওপরে এটি বেশ বোঝা হয়ে যায়, ওইসব পরিবারের বোঝা লাঘবে বিএনপি’র প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
এ সময় তিনি আরো বলেন, ‘বিএনপি আগামীতে সরকার গঠন করলে সরকারের পক্ষ থেকে আলাদাভাবে আমাদের একটি উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য থাকবে-সে যে পরিবারেরই সদস্য হোক, স্বচ্ছল ও অস্বচ্ছল হোক, রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আমরা চেষ্টা করবো যেসকল পরিবারে এরকম মানুষ আছে- তাদের প্রতি সাহায্য-সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে, যাতে সেই পঙ্গু মানুষগুলো নিজেরা যতটা সম্ভব স্বাবলম্বী হতে পারে।’
এজন্য দেশের অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল ব্যক্তিদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার আহ্বানও জানান তারেক রহমান।
বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা সকলে যদি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেই, তাহলে আমরা যেরকম বাংলাদেশ কল্পনা করি সেই বাংলাদেশের সূচনা করতে সক্ষম হবো বলে-আমি বিশ্বাস করি।’
অনুষ্ঠানে দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানে পক্ষ থেকে পঙ্গুদের কাছে হুইল চেয়ার হস্তান্তর করেন।
আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিএনপি’র কোষাধ্যক্ষ ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’র উপদেষ্টা এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, বিএনপি’র শিল্প-বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, বিএনপি’র চট্রগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর হেলাল উদ্দিন বিএনপি’র বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সহ-সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, বিএনপি নেতা ও বিশিষ্ট চিকিৎসক ড. এম এ মুহিত বক্তৃতা করেন।
এসময় বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য ও সাবেক এমপি শাম্মী আক্তার, বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার রাগিব রউফ চৌধুরী ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবুল কাশেমসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ,‘আমরা বিএনপি পরিবার’র সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন, সদস্য মাসুদ রানা লিটন, মুস্তাকিম বিল্লাহ, ফরহাদ আলী সজীব, শাকিল আহমেদ, রুবেল আমিন, শাহাদত হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে আইনশৃংখলা বাহিনীর গুলিতে আহত ও দুস্থ ১০টি পরিবারকে হুইল চেয়ার প্রদান করা হয়।