শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেয়া মানে খুনিকে আশ্রয় দেয়া: রুহুল কবীর রিজভী
ঢাকা, ওপেন প্রেস ডেস্ক : বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ছাত্র-জনতার জনবিস্ফোরণের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেয়া শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেয়া মানে খুনিকে আশ্রয় দেয়া, অপরাধকে আশ্রয় দেয়া।
জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের রজত জয়ন্তী উপলক্ষে আজ ১৮ অক্টোবর ২০২৪ শুক্রবার সকালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে পুস্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। খবর বাসস।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, ডা. শামীম, ডা.কাকনসহ জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের নেতৃবৃন্দ।
পতিত স্বৈরাচার বসে নেই উল্লেখ করে রুহুল কবির রিজভী এ সময় বলেন, গতকাল প্রতিবেশি দেশের একটা স্টেটমেন্ট দেখছেন। তারা স্পষ্ট ভাষায় বলছে, শেখ হাসিনা সেখানে আছেন। ভারতের সাথে তো আমাদের প্রত্যর্পণ চুক্তি আছে। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে কূটনৈতিক আলাপ আলোচনার মাধ্যমে প্রত্যর্পণ বিষয়টি সমাধান করে তাকে ফিরিয়ে আনতে হবে। আর তা না হলে বাংলাদেশে যতো শীর্ষ সন্ত্রাসী আছে তারা সেখানে আশ্রয় পাওয়ার সুযোগ নিবে। বিভিন্ন দেশে এভাবে আ আশ্রয় পাওয়ার সুযোগ পাবে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা শীর্ষ সন্ত্রাসী, খুনি। যে শিশুর রক্ত পান করতে পারে, তার মতো শীর্ষ সন্ত্রাসী আর কে হতে পারে। তাকে আশ্রয় দেওয়া মানে অপরাধকে আশ্রয় দেয়া। অন্যায়কে আশ্রয় দেয়া, খুনীকে আশ্রয় দেয়া। গতকাল তাদের বক্তব্য দেখে মনে হচ্ছে তারা বিগ ব্রাদারের মতো আচরণ করেছে। সেখান থেকে তাদের বেরিয়ে আসতে হবে।
বিএনপি’র মুখপাত্র বলেন, এখনও স্বৈরাচারের হিংস্র থাবা থেকে আমরা মুক্ত হতে পারছি না। গতকাল হঠাৎ করে কয়েক জেলায় শাট ডাউন করা হয়েছে। কিন্তু এরা কারা? আমরা কিন্তু প্রায় দিনই বলেছি স্বৈরাচারের দোসররা এখনো ভিতরে আছে, এরা কিন্তু নাশকতা করবে। আরইবি ও পল্লী বিদ্যুৎ সংস্থাটি গঠন করেছিলেন মহান স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান। গ্রাম-গঞ্জে আলো ছড়িয়ে দেয়ার জন্য, কৃষি উৎপাদনের জন্য এক মহৎ উদ্যোগ নিয়ে গোটা জাতিকে আলোকিত করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। যেহেতু এটি জিয়াউর রহমান প্রতিষ্ঠা করেছেন এটি ধ্বংস করার জন্য স্বৈরাচার শেখ হাসিনা নানা ষড়যন্ত্র করেছিলো। তারা এ নামটি রাখতে চায় না। গতকাল যে ঘটনা ঘটিয়েছে সেটি একটি গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। এ ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমরা কিন্ত কয়েকবার বলেছি। তাদের দাবি দাওয়া থাকলে সরকারের কাছে আবেদন নিবেদন করতে পারতো। কিন্তু তারা তা না করে গতকাল শাটডাউন করলো কেন? কারণ, এটি গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ, এটি নাশকতা। তারা শেখ হাসিনার আমলে এ কর্মসূচি নেয়নি কেন? কারণ, এরা শেখ হাসিনার অনুচর। এ কর্মসূচির সাথে যারা জড়িত তারা সরাসরি শেখ হাসিনার লোক। কথিত স্বৈরাচারের প্রেতাত্মারা ভৌতিক অস্তিত্ব নিয়ে ভেতরে ভেতরে ঢুকে আছে। এ প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করতে তারা ষড়য়ন্ত্র করছে।
আমরা সরকারকে আবারো বলছি আরো বেশি সতর্ক হোন, না হলে রক্তের বিনিময়ে যে অর্জন, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আত্মদানে যে অর্জন, আমরা গণতন্ত্রের পথে যে যাত্রা করছি তারা তা রোধ করে ফেলবে। আপনারা সংস্কারের কথা বলে যে বিলম্ব করছেন তাতে মানুষের মনে সন্দেহ তৈরি হবে। যদি আপনাদের আন্তরিকতা থাকে তাহলে দ্রুত সংস্কার করে জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিন।
অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রতি বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আহ্বান জানিয়ে বলেন, হঠা’ৎ আনুপাতিক ভোটের নির্বাচনের বিষয়টি সামনে এনে জটিলতা তৈরি করবেন না। আনুপাতিক হারে নির্বাচনের নামে জটিলতা তৈরি মানে, স্বাধীনতা বিরোধীদের মদদ দেয়া। পৃথিবীর অনেক দেশ এ পদ্ধতি চালু করে ফিরে এসেছে।
নেপাল চালু করেছিল, এলোমেলো হয়ে গেছে- এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘একটা নতুন পদ্ধতি তৈরি করতে হলে সমাজ এবং জনগণের আকাঙ্খার মিল থাকতে হয়। সুশীল সমাজ এটার ওপর বক্তব্য রাখছেন। আর এটার ওপর ভিত্তি করে যদি মনে করা হয় এটা সঠিক, তাহলে নির্বাচন ব্যবস্থা আরো ভেঙে যাবে। এখন এই আনুপাতিক পদ্ধতিটা বুঝতেই চলে যাবে ৫-১০ বছর।’
তিনি বলেন, অন্তর্র্বতীকালীন সরকারকে প্রত্যেকটা দল সমর্থন করেছে। এটা গণতন্ত্রকামী মানুষের সমর্থিত সরকার, আপনাদেরকে জনগণের অন্তরের ভাষা আগে বুঝতে হবে।