কলম্বিয়াকে ১-০ গোলে হারিয়ে রেকর্ড ১৬তম কোপা আমেরিকা শিরোপা জিতলো আর্জেন্টিনা
মিয়ামি, (১৫ জুলাই, ২০২৪), ওপেন প্রেস ডেস্ক/বাসস /এএফপি : লটারো মার্টিনেজের অতিরিক্ত সময়ের গোলে কলম্বিয়াকে ১-০ ব্যবধানে পরাজিত করে রেকর্ড ১৬তম কোপা আমেরিকা শিরোপা জয় করেছে আর্জেন্টিনা।
মিয়ামির হার্ড রর্ক স্টেয়িামে নিরাপত্তাজনিত কারণ ও দর্শকদের বিশৃঙ্খলায় ফাইনাল ম্যাচ নির্ধারিত সময়ের ৮২ মিনিট পর শুরু শুরু হয়। বদলী খেলোয়াড় মাটিনেজের দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে ম্যাচের শেষ হাসি হাসে আর্জেন্টাইনরা। এর মাধ্যমে টুর্নামেন্টে পাঁচ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন মার্টিনেজ।
২০২১ কোপা জয়ের পর ২০২২ কাতার বিশ^কাপ শেষে এ নিয়ে আর্জেন্টিনা টানা তৃতীয় বৈশি^ক কোন শিরোপা জয়ের কৃতিত্ব দেখালো।
৬৬ মিনিটে ইনজুরিতে পড়ে মাঠত্যাগে বাধ্য হওয়া আর্জেন্টাইন অধিনয়ক লিওনের মেসি ডাগ আউটে ফিরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। ম্যাচের বাকি সময়টা তাকে দর্শক হিসেবে কাটাতে হয়েছে। একইসাথে জাতীয় দল থেকে কাল বিদায় নিয়েছেন অভিজ্ঞ উইঙ্গার আবেগাপ্লুত এ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া।
এদিকে কলম্বিয়ার জন্য রাতটি ছিল দারুন হতাশার। ২০০১ সালে কোপা আমেরিকার একমাত্র শিরোপা জেতা দলটি টানা ২৮ ম্যাচ পর পরাজয়ের তিক্ত অভিজ্ঞতা পেল। নেস্তর লোলেঞ্জোর দলের জন্য এর থেকে বিষাদের রাত আর হতে পারেনা। স্টেডিয়াম জুড়ে উচ্ছসিত সমর্থকদের বিশৃঙ্খলায় ম্যাচের আগে থেকেই কলম্বিয়া বেশ বিপাকে ছিল। যার প্রভাব ম্যাচেও পড়েছে। আয়োজকদের দাবী- অনেক সমর্থখক বিনা টিকেটে মাঠে প্রবেশের জন্য জোড় প্রচেষ্টা চালিয়েছে। ভেন্যুতে প্রবেশের পথে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ছিলনা বলে দাবী উঠেছে। এসময় প্রচন্ড গরমে কিছু কিছু সমর্থককে অসুস্থ হয়ে পড়তে দেখা গেছে। শেষ পর্যন্ত কোন ধরনের পরীক্ষা ছাড়া গেট উন্মুক্ত করে দেয়া হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় এবং ম্যাচ মাঠে গড়ায়।
সাত মিনিটে কলম্বিয়ান জন করবোবা দুর্দান্ত শটে বল পোস্টে লাগান। কিন্তু কোন দলই প্রথমার্ধে তাদের স্বাভাবিক খেলা খেলতে পারেনি। ডি মারিয়া ২০ মিনিটে মেসির দিকে একটি লো বল এগিয় দেন। বক্সের ভিতর থেকে মেসির বা পায়ের শট সহজেই রুখে দেন কলম্বিয়ার গোলরক্ষক ক্যামিলো ভারগাস। এরপর কলম্বিয়াকে কিছুটা উজ্জীবিত দেখা গেছে। ৩৩ মিনিটে জেফারসন লারমা ২৫ গজ দুর থেকে শট নিয়েছিলেন। এমিলিয়ানো মার্টিনেজ ডাইভ দিয়ে তা রক্ষা করেন। ৩৬ মিনিটে মেসির ড্রিবল সান্তিয়াগো এরিয়াস স্লাইডিং চ্যালেঞ্জের মাধ্যমে নষ্ট করে দেন। এসময় আর্জেন্টাইন অধিনায়কে মাঠে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে। বামদিক থেকে মেসির কার্লিং ফ্রি-কিকে নিকোলাস টাগলিয়াফিকোর হেড অল্পের জন্য টার্গেট মিস করে।
বিরতির পর দুই দলই গোলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। হামেস রড্রিগুয়েজের কর্নার থেকে ডেভিনসন সানচেজের হেড বারের উপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। ডি মারিয়া বামদিক থেকে তার ট্রেডমার্ক শটে ভারগাসকে পরাস্ত করতে ব্যর্থ হন। ৬৬ মিনিটে মধ্যমাঠে হঠাৎ করেই কারো সাথে কোন সংঘর্ষ না হয়েও মেসি বদলী বেঞ্চের দিকে তাকে উঠিয়ে নেবার ইঙ্গিত করেন। মেসির পরিবর্তে ঐ সময় মাঠে নামেন নিকোলাস গঞ্জালেজ। এটাই হয়তোবা মেসির শেষ কোন বড় টুর্নামেন্ট। যে কারনে বদলী বেঞ্চে যাবার সময় তাকে কাঁদতে দেখা গেছে। ৭৫ মিনিটে টাগলিয়াফিকোর পাসে গঞ্জালেজ লো শটে ভারগাসকে পরাস্ত করলেও অফসাইডের কারনে গোলটি বাতিল হয়ে যায়।
অতিরিক্ত সময়ে ম্যাচের গতি কিছুটা পরিবর্তিত হয়। ১১২ মিনিটে লিনড্রো পারেডেস মধ্যমাঠে বল পেয়ে গিওভানি লো সেলসোর দিকে বাড়িয়ে দেন। প্রথম সুযোগেই লো সেলসোর নিখুঁত পাসে মার্টিনেজ বল জালে জড়ান।
কলম্বিয়ার আর্জেন্টাইন কোচ লোরেঞ্জো বলেছেন তার দল শারিরীক ভাবে পিছিয়ে পড়েছিল, ‘পুরো টুর্নামেন্টে খেলোয়াড়রা তেমন একটা পরিশ্রান্ত হয়নি, যতটা ফাইনালে হয়েছে। ২১ দিনে তারা ৬ ম্যাচ খেলেছে।