সুপার এইটের পথে এগিয়ে যেতে কাল মুখোমুখি যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত
নিউইয়র্ক , (১১ জুন, ২০২৪), ওপেন প্রেস ডেস্ক/বাসস : চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপে ‘এ’ গ্রুপের সেরা দু’দল স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত। নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচেই জয় তুলে নিয়ে পূর্ণ ৪ পয়েন্ট পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত। গ্রুপ পর্বের তৃতীয় ম্যাচে কাল দেখা হচ্ছে দু’দলের। সুপার এইটের পথে এগিয়ে যাবার জন্য এ ম্যাচেও জয়ের জন্য মরিয়া যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত। তবে আজ যদি পাকিস্তানের কাছে হেরে যায় কানাডা, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত ম্যাচের জয়ী দলের সুপার এইট নিশ্চিত হয়ে যাবে। কানাডা জিতলে, গ্রুপের পরের ম্যাচগুলো জন্য অপেক্ষা করতে হবে, কারা সুপার এইটে খেলবে। নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা ৩০ মিনিটে।
স্বাগতিক হিসেবে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপে খেলার সুযোগ পায় যুক্তরাষ্ট্র। প্রথমবারের মত বিশ^কাপের মঞ্চে খেলতে নেমেই বিশ^কে চমকে দিয়েছে তারা। নিজেদের প্রথম ম্যাচে কানাডার বিপক্ষে ৭ উইকেটে ম্যাচ জিতে যুক্তরাষ্ট্র। কানাডার ১৯৪ রান, ১৪ বল বাকী রেখে স্পর্শ করে ফেলে স্বাগতিক দলটি।
কানাডার পর শক্তিশালী পাকিস্তানের মুখোমুখি হয় যুক্তরাষ্ট্র। উপমহাদেশের দলটির বিপক্ষে সুুপার ওভারে জয়ে বিশ^কাপের প্রথম অঘটনের জন্ম দেয় তারা। দারুন বোলিং নৈপুন্য পাকিস্তানকে ৭ উইকেটে ১৫৮ রানে আটকে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। জবাবে মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে ১৫৮ রান করে ম্যাচ টাই করে স্বাগতিকরা।
সুপার ওভারে ১ উইকেটে ১৮ রান তুলে পাকিস্তানকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু ১ উইকেটে ১৩ রানের বেশি করতে পারেনি পাকিস্তান।
পকিস্তানকে হারানোর পর আরেক শক্তিশালী দল ভারতকে হারানোর হুমকি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের অধিনায়ক মোনাঙ্ক প্যাটেল। তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ছিলো বিশ^কাপে বড় দলগুলোর বিপক্ষে ভালো ক্রিকেট খেলা। সেক্ষেত্রে প্রথম পরীক্ষায় পাকিস্তানকে হারিয়েছি আমরা। এবার আমাদের সামনে দ্বিতীয় পরীক্ষার নাম- ভারত। এবারও আমরা একত্রে জ¦লে উঠে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে চাই। ভারতকে এক বিন্দুও ছাড় দিবো না। আমাদের নির্ভিক ক্রিকেট অব্যাহত থাকবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের মত দারুন ছন্দে আছে ভারতও। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৮ উইকেটের জয় দিয়ে বিশ^কাপ অভিযান শুরু করে টিম ইন্ডিয়া। নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ভারত সামনে পায় পাকিস্তানকে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি পাকিস্তানের বিপক্ষে অসাধারন এক জয় তুলে নেয় ভারত।
নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামে ১১৯ রানের পুঁজি নিয়েও বোলারদের জাদুকরী বোলিংয়ে ৬ রানের নাটকীয় জয় পায় ভারত। বিতর্কিত উইকেটে ১১৯ রানে গুটিয়ে যায় ভারত। জবাবে ১৪ ওভারে ৩ উইকেটে ৮০ রান তুলে জয়ের পথেই ছিলো পাকিস্তান। শেষ ৬ ওভারে ৭ উইকেট হাতে নিয়ে ৪০ রান দরকার ছিলো পাকিস্তানের।
কিন্তু ১৫ ওভার থেকে পাকিস্তানের হিসাব-নিকাশ পাল্টে দেন ভারতের তিন পেসার জসপ্রিত বুমরাহ, হার্ডিক পান্ডিয়া ও আর্শদীপ সিং। শেষ ৩৬ বলে ৪ উইকেটে পাকিস্তানকে ৩৩ রানের বেশি তুলতে দেয়নি ভারতের বোলাররা। ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১১৩ রান করে ম্যাচ হারে পাকিস্তান। ৪ ওভারে ১৪ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ভারতের জয়ের নায়ক বুমরাহ। পান্ডিয়া িি২ট ও আর্শদীপ ১ উইকেট নেন।
টানা দুই জয়ের পরও স্বস্তির নিঃশ^াস ফেলতে নারাজ ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা। জয়ের ধারা অব্যাহত রাখাই মূল লক্ষ্য দলের। তিনি বলেন, ‘প্রথম দুই ম্যাচের আমরা জিতেছি। পাকিস্তানের বিপক্ষে অসাধারন জয় পেয়েছি আমরা। তারপরও আমরা নিশ্চিন্তে থাকতে চাই না। জয়ের ধারা অব্যাহত রাখাই মূল লক্ষ্য আমাদের। জয়ের ছন্দটা ধরে রাখতে চাই। যাতে কোন ছেদ না পড়ে। তাই যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষেও জয়ের জন্যই মাঠে নামবো আমরা।’
এই প্রথমবারের মত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মুখোমুখি হচ্ছে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। এ ম্যাচ নিয়ে বাড়তি উন্মাদনা কাজ করছে দু’দলের মধ্যে। যুক্তরাষ্ট্রের দলপতি প্যাটেল বলেন, ‘ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ খেলবো আমরা। বিশ^ ক্রিকেটের অন্যতম শক্তিশালী ও জনপ্রিয় দল তারা। সবাই এ ম্যাচটির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।’
ভারতের অধিনায়ক রোহিত বলেন, ‘প্রথমবারের মত বিশ^কাপ খেলছে যুক্তরাষ্ট্র। নিজেদের প্রথম বিশ^কাপেই চমক দেখিয়েছে তারা। এমন দলের সাথে আমরাও খেলতে মুখিয়ে আছি। তাদের জন্য শুভকামনা থাকলো।’
ভারত দল : রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), হার্দিক পান্ডিয়া (সহ-অধিনায়ক), যশস্বী জয়সওয়াল, বিরাট কোহলি, সূর্যকুমার যাদব, ঋষভ পান্থ (উইকেটরক্ষক), সঞ্জু স্যামসন (উইকেটরক্ষক), শিবম দুবে, রবীন্দ্র জাদেজা, অক্ষর প্যাটেল, কুলদীপ যাদব, যুজবেন্দ্রা চাহাল, আর্শদীপ সিং, জসপ্রিত বুমরাহ, মোহাম্মদ সিরাজ।
যুক্তরাষ্ট্র দল : মোনাঙ্ক প্যাটেল (অধিনায়ক), অ্যারন জোন্স, এন্ড্রিস গোস, কোরি অ্যান্ডারসন, আলী খান, হারমিত সিং, জেসি সিং, মিলিন্ড কুমার, নিসর্গ প্যাটেল, নীতিশ কুমার, নসথুশ কেনজিগে, সৌরভ নেত্রভালকার, শেডলি ভ্যান, স্টিভেন টেইলর ও শায়ান জাহাঙ্গীর।