হৃদয়-সৌম্যর হাফ-সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ২৮৬ রান
চট্টগ্রাম, (১৫ মার্চ ২০২৪), ওপেন প্রেস ডেস্ক/বাসস) : তাওহিদ হৃদয় ও সৌম্য সরকারের জোড়া হাফ-সেঞ্চুরিতে শ্রীলংকার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে প্রথমে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৮৬ রান করেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। হৃদয় অপরাজিত ৯৬ ও সৌম্য ৬৮ রান করেন।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং করতে নামে বাংলাদেশ।ব্যাট হাতে বাংলাদেশের ইনিংস শুরু করে এবারও হতাশ করলেন লিটন দাস। প্রথম ওয়ানডেতে প্রথম বলে গোল্ডেন ডাকের পর এবার তৃতীয় বলে খালি হাতে সাজঘরে ফিরেন লিটন।
শ্রীলংকার পেসার দিলশান মাদুশাঙ্কার বলে ফ্লিক করতে গিয়ে স্কয়ার লেগে দুনিথ ওয়েলালাগেকে ক্যাচ দিলেন লিটন। ৯১ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এ নিয়ে ১৪ বার শূন্য রানে আউট হলেন লিটন। এরমধ্যে শ্রীলংকার বিপক্ষে সর্বোচ্চ ৪বার।
লিটনের বিদায়ে ক্রিজে আসেন আগের ম্যাচে অপরাজিত ১২২ রান করা বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে দু’বার জীবন পান তিনি। পেসার প্রমোদ মাদুশানের অফ স্টাম্পের বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে স্লিপে নাজমুলের ক্যাচ ফেলেন পাথুম নিশাঙ্কা।
ওভারের পঞ্চম বলে নাজমুলের ব্যাটে লেগে বল জমা পড়ে শ্রীলংকার উইকেটরক্ষকের হাতে। কিন্তু তাতে কোন আবেদন করেননি শ্রীলংকার ফিল্ডাররা।
দু’বার জীবন পেয়ে ওপেনার সৌম্য সরকারকে নিয়ে দ্রুত রান তোলায় মনোযোগী হন শান্ত। জুটিতে ৭২ বলে ৭৫ রান আসার পর বিদায় নেন তিনি। মাদুশাঙ্কার বলে উইকেটরক্ষক কুশল মেন্ডিসকে ক্যাচ দেন ৬টি চারে ৩৯ বলে ৪০ রান করা শান্ত।
তৃতীয় উইকেটে শান্ত ফেরার পর তাওহিদ হৃদয়কে নিয়ে দলের রান ১শ পার করেন সৌম্য। এরই মধ্যে ৫২ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১২তম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান সৌম্য।
হাফ-সেঞ্চুরির পরও দক্ষতার সাথেই ইনিংস বড় করার পথেই ছিলেন তিনি। কিন্তু শ্রীলংকার স্পিনার হাসারাঙ্গা ডি সিলভার বলে রিভার্স সুইপ করে মাদুশাঙ্কাকে ক্যাচ দিয়ে আউট হলে ১১টি চার ও ১টি ছক্কায় ৬৬ বলে ৬৮ রান করা সৌম্য ইনিংসের বিদায় ঘটে। হৃদয়ের সাথে ৫৪ বলে ৫৫ রান যোগ করেন সৌম্য। এই ইনিংস খেলার পথে বাংলাদেশের দশম ব্যাটার হিসেবে ওয়ানডেতে ২ হাজার রান পূর্ণ করেন এই বাঁ-হাতি ব্যাটার। সেই সাথে বাংলাাদেশের দ্রুততম ব্যাটার হিসেবে ওয়ানডেতে ২হাজার রানের নয়া রেকর্ড গড়েন সৌম্য।
সৌম্যকে ফেরানোর পর একই ওভারে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ শুন্য হাতে হাসারাঙ্গার শিকার হলে ১৩০ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
একই ওভারে সৌম্য-মাহমুদুল্লাহর বিদায়ের পর বাংলাদেশকে লড়াইয়ে ফেরান হৃদয় ও মুশফিকুর রহিম। এই জুটিও হাফ-সেঞ্চুরির পথে ছিলো। এমন অবস্থায় বাঁধা হয়ে দাঁড়ান হাসারাঙ্গা। সুইপ করে বল ব্যাটে লাগাতে পারেনি ২৫ রান করা মুশফিক। শ্রীলংকার লেগ বিফোর আউটের আবেদন নাকচ করে দেন নন-স্ট্রাইকের আম্পায়ার। রিভিউ নিয়ে মুশফিককে সাজঘরের পথ দেখায় শ্রীলংকা। হৃদয়-মুশফিক জুটিতে ৪৩ রান তুলেন তিনি।
সাত নম্বরে ক্রিজে এসে সুবিধা করতে পারেননি মেহেদি হাসান মিরাজ(১২)। হাসারাঙ্গার চতুর্থ শিকারে পরিনত হলে ১৮৯ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
এ অবস্থায় টেল এন্ডার তানজিম হাসান সাকিবকে জুটি গড়ার পথে ওয়ানডেতে সপ্তম হাফ-সেঞ্চুরি করেন হৃদয়। ৮ ইনিংস পর অর্ধশতক করতে ৭৪ বল খেলেন তিনি।
হৃদয়ের সাথে ৪৭ রান যোগ করে ব্যক্তিগত ১৮ রানে আউট হন তানজিম। তার বিদায়ের পর ইনিংসের শেষ ২৩ বলে ঝড় তুলেন হৃদয় ও তাসকিন আহমেদ। ২৩ বলে অবিচ্ছিন্ন ৫০ রান যোগ করে বাংলাদেশকে ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৮৬ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ এনে দেন হৃদয় ও তাসকিন।
ইনিংসের শেষ দুই বলে দুই ছক্কা মেরে ৯৬ রানে অপরাজিত থাকেন হৃদয়। ১০২ বলের ইনিংসে ৩টি চার ও ৫টি ছক্কা মারেন তিনি। ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ১০ বলে অপরাজিত ১৮ রান করেন তাসকিন। শ্রীলংকার হাসারাঙ্গা ৪৫ রানে ৪ উইকেট নেন।