২৩ দফা ইশতেহারসহ অসমাপ্ত কাজ শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিলেন ইকরামুল হক টিটু
রওশন ঝুনু, ময়মনসিংহ : ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ২৩ দফা নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা করেছেন মেয়র প্রার্থী ইকরামুল হক টিটু। আজ ৩ মার্চ ২০২৪, রোববার সকালে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন তিনি। এ সময় নগর উন্নয়ন ও নাগরিক দুর্ভোগ নিরসনসহ অন্যান্য সমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে নগরবাসীর কাছে আবারো ভোট চাইলেন সদ্য সাবেক, মসিক এর প্রথম মেয়র।
আগামী ৯ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে, ইকরামুল হক টিটু বলেন, ‘চার বছর ৯ মাস আগে সিটি কর্পোরেশনের প্রথম মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলাম। এরপরই শুরু হয় করোনা মহামারি। মহামারি শেষ হতেই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে শুরু হয় বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা। দুটি কারণে সরকার ব্যয় সাশ্রয়ী নীতি গ্রহণ করায় উন্নয়নকাজ কম হয়েছে। তবু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়নে বড় ধরনের বরাদ্দ দেন। বর্তমানে সে বরাদ্দের অধীনে ৭০ শতাংশ কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। উন্নয়নকাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। এবার নির্বাচিত হলে ঘোষিত ইশতেহার বাস্তবায়ন করবো। সেইসঙ্গে অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে চাই।’
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুলসহ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।
২৩ দফা ইশতেহারের মধ্যে রয়েছে নগরীর প্রধান সমস্যা যানজট নিরাসনে যুগোপযোগী উদ্যোগ গ্রহণ এবং প্রয়োজনে ওভারপাস-ফ্লাইওভার নির্মাণ, নগরীর প্রবেশদ্বারের কাছে তিনটি বাস টার্মিনাল ও একটি ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ, নগরীর খালসমূহ দখলমুক্তকরণের মাধ্যমে পানিপ্রবাহ বৃদ্ধি ও জলাবদ্ধতা নিরসন, হোল্ডিং ট্যাক্স না বাড়িয়ে সেবার মান বৃদ্ধি, ট্রেড লাইসেন্স ফি যুক্তিসংগত ও সহনীয় পর্যায়ে রাখা, পরিচ্ছন্ন ও দূষণমুক্ত নগরী গড়ার লক্ষ্যে মেডিক্যাল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়ন, বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রক্রিয়াধীন প্রস্তাবটি দ্রুত অনুমোদনের ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে বর্জ্যমুক্ত পরিবেশ গড়ে তুলতে উদ্যোগ গ্রহণ, নাগরিক সেবা আরও সহজলভ্য করতে প্রস্তাবিত আধুনিক নগর ভবন প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন, নাগরিক সেবা ডিজিটালাইজড করার উদ্যোগ গ্রহণ, নগরীর সৌন্দর্যবর্ধনের লক্ষ্যে নানা যুগোপযোগী পরিকল্পনা গ্রহণ, নাগরিক চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যে চলমান চারটি নাগরিক সেবা কেন্দ্রের পরিধি বৃদ্ধি ও দুটি নির্মাণাধীন হাসপাতালের কাজ দ্রুত শেষ করার উদ্যোগ গ্রহণ, বেকারত্বরোধে তরুণ-তরুণীদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বৃদ্ধির মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল করে তোলা, বর্ধিত নতুন এলাকা সমূহ নগরবিন্যাসের পরিকল্পনা প্রণয়নের মাধ্যমে আগামী নগরীকে স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তোলা, বিভাগীয় সাংস্কৃতিক পল্লী নির্মাণে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ, শিশুদের শারীরিক বিকাশের জন্য প্রস্তাবিত শেখ রাসেল শিশু পার্ক প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন, সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, কবরস্থান শ্মশানঘাটসমূহ আরও সুবিধা সংবলিত করতে ব্যবস্থা গ্রহণ, সিটি করপোরেশনের বিদ্যমান পাঁচটি অনলাইন সেবা ছাড়াও অন্যান্য সেবা ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে নাগরিকসেবা হাতে পৌঁছে দেওয়া, ৩৩টি ওয়ার্ডে স্মার্ট কর্নার স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ এবং বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে সিটি করপোরেশনের সঙ্গে নাগরিকদের সহজ যোগাযোগব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ।
নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। তবে আওয়ামী লীগের তিন নেতাসহ মোট পাঁচ প্রার্থী মেয়র পদে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। তারা হলেন সদ্য সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ইকরামুল হক (দেয়াল ঘড়ি), জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম (ঘোড়া), শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সাদেকুল হক খান টজু (হাতি), কৃষক লীগের সাবেক সদস্য কৃষিবিদ ড. মো. রেজাউল হক (হরিণ) এবং জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম (লাঙ্গল)।