জাতীয়রাজনীতি

পিটার হাসকে এখনই বাংলাদেশ থেকে বের করে দেওয়া প্রয়োজন : সাবেক বিচারপতি মানিক

রওশন ঝুনু, ঢাকা :  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে এখনই বাংলাদেশ থেকে বের করে দেওয়া প্রয়োজন বলে দাবি জানিয়েছেন আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। সে নির্লজ্জভাবে আমাদের আভ্যন্তীন বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেই যাচ্ছে।

অপরদিকে ২৮ অক্টোবর বিএনপি যদি পুনরায় সন্ত্রাসের পথ বেছে নেয় তাহলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দরকার হবে না, সাধারণ জনগণই তাদের রুখে দাঁড়াবে বলে সাবধান করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা, সিনিয়র সাংবাদিক নেতা ইকবাল সোবহান চৌধুরী।

শুক্রবার স্বাধীনতা সাংবাদিক ফোরাম আয়োজিত জাতীয় প্রেস ক্লাবের দ্বিতীয় তলায় তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে ‘দেশ আমার সিদ্ধান্ত আমার’শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক এবং সভাপতি ইকবাল সোবহান চৌধুরী এসব কথা বলেন।

সভায় অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, আইনত এক দেশ অন্য দেশের আভ্যন্তরিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। কিন্তু পিটার হাস অত্যন্ত নগ্নভাবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে যাচ্ছেন তো যাচ্ছেনই। তাকে এখনই বাংলাদেশ থেকে বহিস্কার করা প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে। কারণ সে কোনো বাঁধাই মানতে রাজি না। মনে হচ্ছে, সেই যেনো এই দেশের মালিক, রাষ্ট্রপ্রধান।

এদিকে বিএনপি-জামাত তথা স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি হাসের তালে তাল মিলিয়ে নিজ দেশের সঙ্গে মীর জাফরের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। মানিক বলেন,, সেদিন একজন বিএনপির নেতা বলছিলেন, পিটার হাস হচ্ছেন অবতার। আমাদের দেশে ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে সেই জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যরা এ বিষয়ে এবং গাজায় হামলা বিষয়ে কোনো প্রতিবাদ করছে না। বরং মেনে নিয়েছে। এই কথা থেকে এটি পরিস্কার যে, বিএনপি জামায়াতীরা দেশের মানুষের ওপর আস্থা রাখতে পারছে না। তাই তারা চেষ্টা করছে বিদেশি প্রভূদের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করতে চায়।

মানিক বলেন,  আমরা পাকিস্তানি উপ-রাষ্ট্রদূতকে এদেশ থেকে বহিস্কার করেছি। কারণ সে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী কথা বলেছিলো। যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকারের কথা বলছে অথচ ফিলিস্তিনে যেভাবে মানবতা ও  মানবাধিকার লুণ্ঠিত হচ্ছে সেখানে ইসরাইলের মদদদাতা মার্কিনীদের মুখে মানকতার কথা মানায় না। অসংখ্য শিশু নারীসহ নীরিহকে ফিলিস্তিনিদের হত্যা করা হচ্ছে।হাসপাতালে হামলা করছে, এদের মধ্যে মুসলমানও রয়েছে। খ্রিস্টান, ইহুদিও আছে। সেখানেও মার্কিনরা হস্তক্ষেপ করছে।

ডেইলি অবজারভারের সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, স্বাধীনতার মধ্যেম দুইটি । এক, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা। দুই, আরেকটি দেশ-জাতির স্বাধীনতা। এই দুটি মাধ্যমে স্বাধীনতা আমদের দিয়ে গেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। একাত্তরে হাজারো দেশি বিদেশি শত্রুরা স্বাধীনতার বিরোধীতাকরেছিলো, সেসব বাঁধা অতিক্রম ক’রে বঙ্গবন্ধু দেশের মাসুষকে সংগঠিত ক’রে, নেতৃত্ব দিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছেন। আর আজ তাঁর সুযোগ্য কন্যা পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গ’ড়ে তুলতে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছেন। আজো সেই স্বাধীনতা বিরোধীরা বিরোধীতা করেই যাচ্ছে।তারা পদ্মা সেতুর বিরোধীতা করেছিলো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকল বিরোধীতার মুখে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে দেখিয়ে দিয়েছেন। আজ যারা শেখ হাসিনার পদত্যাগ দাবী করছে, তারা জানে না, একজন শেখ হাসিনার পদত্যাগের মধ্য দিয়ে কখনো সরকারের পদত্যাগ হবে না। নির্বাচনই সরকার পরিবর্তনের একমাত্র পথ।

ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ একটি নীতি অবলম্বন করছে, সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়, সেই সুযোগের অপব্যবহার করছে পিটার হাস। আর তার কাছে নিজেদের সমর্পন করেছে বিএপি-জামাত।  ২৮ অক্টোবর বিএনপি যদি আবার সন্ত্রাসের দিকে যায়, তাহলে সরকারী হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হবে না, জনগণই তাদের নিশ্চিহ্ন করে দেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সত্রাসীরা সংখ্যায় বেশি নয়। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করি, তারা সবাই যদি এক হয়ে স্বাধীনতা বিরোধীদের প্রতিহত করতে ঐক্যবদ্ধ থাকি তাহলে একাত্তরের মতো্ এবারও এরা পরাজিত হবে। আসুন সকলে মিলে সন্ত্রাসীদের প্রত্যাখ্যান করি, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের  দেশকে আমরাই রক্ষা করি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাঁচিয়ে রাখতে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই।

ফিলিস্তিনে হত্যা হচ্ছে মার্কিনীদের বিরুদ্ধে মুসলমানদের কেনো বিক্ষোভ প্রতিবাদ জচ্ছে না কেনো? ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রেখে ইকবার সোবহান চৌধুরী বলেন, সরকার পতনের বিক্ষোভ অনেক দেখেছি, ৫ ফেব্রুয়ারির কথা আমরা ভুলিনি। ধর্মকে ব্যবহার করে যারা রাজনীতি করেন ফিলিস্তিনের পক্ষে আজ সেই মুসলমান শক্তি মাঠে নেই কেনো, তাদের থাকতে হবে, তবেই বুজবো, আমরা ফিলিস্তিনের সাথে আছি।

সাংনাদিক ইউনিয়নের ডিইউজের যুগ্ম সম্পাদক খায়রুল আলমের সঞ্চালনায় আলোচনা ষভায় আরও বক্তব্য রাখেন, বিএফিউজের সাবেক মহাসচিব আব্দুল জলিল ভূঁইয়া, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ দিদার বখত, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জরী কমিশন এর সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় এর কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া, তথ্য কমিশনার ও সাবেক আইজিআর শহিদুল আলম ঝিনুক, দৈনিক সংবাদের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক কাসেম হুমায়ুন, বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু, আওয়ামী ওলামা লীগের সভাপতি মাওলানা আবদুল মমিন সিরাজী প্রমূখ।

Share

Follow us